সরকার পতনের আন্দোলনে গণতান্ত্রিক শক্তিকে পাশে চায় বিএনপি

বাংলাদেশ

বিশ দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যানের উদ্যোগে সরকার পতনের আন্দোলন নিয়ে বিএনপিতে চলছে নানান আলোচনা। এ ব্যাপারে দলটির অনেকের রয়েছে ভিন্নমত।

কেউ বলছেন, গণতান্ত্রিক দল বা সংগঠন ছাড়া অন্য কাউকে সহযোদ্ধা করার পক্ষপাতি নন তারা। আবার কেউ বলছেন, কোনো সংগঠনের ব্যানারে সভা-সমাবেশে অংশ নেয়ার আগে আরো বেশি সতর্ক থাকা দরকার।

২০২১ সালের মধ্যেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে হটাতে  বিএনপি যখন এই আহবান জানাচ্ছে তখন সরকার পতনের সেই অভিন্ন বার্তাই আরেকটি প্ল্যাটফর্ম থেকে দেয়া হল। যারা রাজনৈতিক পরিচয়ে নয় বরং পুরোনো পেশার পরিচয়ে শনিবার রাজধানীতে একটি দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন।

যেখানে অংশ নেন ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির বেশ কজন দায়িত্বশীল নেতা।

বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন,’এরশাদ যখন সাত্তারের কাছ থেকে ক্ষমতা নিলেন, তখন আজকের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আই এ্যাম নট আন হ্যাপি(আমি দুঃখিত নই)। আবার মইনুদ্দিন, ফখরুদ্দিন এবং সেনাবাহিনী যখন ক্ষমতা নিয়েছিলো তখন শেখ হাসিনা বলেছিলেন যে, আমরা আপনাকে ইনডেমনিটি দেব। এটা আমাদের আন্দোলনের ফসল। তখন দোষ হয় না?’

যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের মতে,’সবার সচেতন এবং সতর্ক হওয়া উচিত। সব জায়গায় যাবার আগে আমাদের চিন্তা করা উচিত। অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত বিভিন্ন মহল থেকে হবে। আমরা না বুঝে হয়তো সেই চক্রান্তে পা দিতে পারি। সেটা যেন কেউ না ঘটায়। এখন যেহেতু এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তাই এখন কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করা না করার বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত।’

পথ হারানোর নানা শঙ্কা থাকলেও সরকার বিরোধী সবাইকে একছাতার নিচে চান নেতারা। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন,’বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন আনতে গেলে যেভাবে সাজানো আছে এভাবে হবে না। এটা এ দেশের জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অভ্যাুত্থানের পথে কিন্তু অনেকেই এসে যেতে পারে। তখনই একটা স্রোতে মিলিত হবে।’

তবে,  দোয়া মাহফিলে বিএনপি নেতাদের উপস্থিতি দলে তৈরি করেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও। বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা জানান,’আমাদের ভাইস চেয়ারম্যান বা যে সকল নেতারা গিয়েছেন তাদের কর্মপন্থা সম্পর্কে আমরা জানি না। তবে আমাদের চেয়ারপরাসন কিন্তু কখনই কোন অসাংবিধানিক পদ্ধতিতে ক্ষমতা গ্রহণে বিশ্বাস করেন না।’

বিএনপি সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন,’যারা গনতন্ত্রের পক্ষে তারা যদি এক হয় তাহলে কিন্তু এই পথ সুগম হয়।’

রীয়তপুর জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদ আহমেদ আসলাম জানান,’যিনি আমাদের এ্যাকটিং চেয়ারম্যান তাকে বাইপাস করে কিছু বলবো বা করবো এটা উচিত না। দল থেকে একক সিদ্ধান্তে আসা উচিত।’

গেল ১২ই ডিসেম্বর বিজয়কে সুসংহত করার আহবানে  জাতীয় প্রেসক্লাবে আরেকটি সভা করেছিলনে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।  ওই সভায় যোগ দেয়ার দুদিন পরই কারণ দর্শানোর চিঠি পান বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।