শেষ পর্যন্ত বিদায় নিতেই হচ্ছে আলোচিত-সমালোচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য, করোনার মতো ইস্যুকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য, নির্বাচনে হেরেও ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা আর সমর্থকদের দিয়ে ক্যাপিটল হিলে নজীরবিহীন তান্ডব করিয়ে বাজে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রে খলনায়ক হিসেবেই বিদায় নিতে হচ্ছে ট্রাম্পকে। বিচিত্র সব অঙ্গভঙ্গি, বিতর্কিত মন্তব্য আর দাম্ভিক আচরণের জন্য সব সময় আলোচনায় ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২০১৭ সালের ২০শে জানুয়ারি দায়িত্ব নেন এই ধনকুবের রিপাবলিকান। সব সময় সত্য বলার অঙ্গীকার করেও বারবার ডাহা মিথ্যা বলে সমালোচিত হয়েছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রায় পুরোটা সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছেন ট্রাম্প। অপমান করেছেন নারী সাংবাদিকদের।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ, সৌজন্য সাক্ষাতের সময় বিশেষ কায়দায় করমর্দনের দৃশ্য হাস্যরস তৈরি করেছে। তবে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে প্রথম কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টের আলিঙ্গনের দৃশ্য অবাক করেছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
করোনায় বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে যখন মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে তখন তার নানা নেতিবাচক মন্তব্যে খোদ ট্রাম্প প্রশাসনেই অস্বস্তি তৈরি হয়। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে বের হওয়া কিংবা হোয়াইট হাউসে ফিরে তাচ্ছিল্যভরে মাস্ক খুলে ফেলার দৃশ্যও সংবাদের শিরোনাম হয়েছে।

তার সময়ে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি ত্যাগ, ইরানের সেনা অধিনায়ক কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়েছে বিশ্ববাসী।
অভিবাসন প্রত্যাশীদের গালাগাল করতে কখনো দ্বিধা করেননি বর্ণবাদী ও কট্টর জাতীয়তাবাদী তকমা পাওয়া ট্রাম্প।
ট্রাম্পের সময়ে পুলিশি হামলার পর বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে কৃষাঙ্গদের বিক্ষোভ আর শ্বেতাঙ্গ উগ্রপন্থিদের উত্থানও দেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ।
প্রথম কোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুইবার অভিশংসিত হয়েছেন ট্রাম্প। সবশেষ তার আহ্বানে ক্যাপিটল হিলে সমর্থকদের নজিরবিহীন হামলায় হতবাক হয়েছে গোটা বিশ্ব।
ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য মামলা মোকদ্দমা থেকে শুরু করে সবরকম চেষ্টাই ছিল ট্রাম্পের। শেষরক্ষা না হলেও তার উন্মাদনা, নেতিবাচক রাজনীতি যুক্তরাষ্ট্রকে যে খাদের কিনারে দাঁড় করিয়েছে, ঐতিহাসিকভাবে যুদ্ধবাজ হিসেবে পরিচিত ডেমোক্র্যাটরা সেখান থেকে দেশকে উদ্ধার করতে পারবে কী না, তাই এখন দেখার অপেক্ষা।