মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা ঘোষণাপত্রে যা ছিল

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারে গত সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ আনে দেশটির সেনাবাহিনী। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে আজ সোমবার দেশটির শীর্ষ নেতাদের আটক করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সেনাবাহিনী।

কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা সরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত একটি ভিডিওতে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর মায়োড্ডি টেলিভিশনে (এমডব্লিউবি) জারিকৃত এ জরুরি অবস্থা ঘোষণাপত্রে যা ছিল:

“গত ৮ নভেম্বরের বহুদলীয় সাধারণ নির্বাচনে যে ভোটার তালিকা ব্যবহার করা হয়েছিল তাতে অনেক অনিয়ম ছিল। কিন্তু ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশন (ইউইসি) এই বিষয়টি মীমাংসা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

সাধারণ নির্বাচনের সময় ব্যবহৃত ভোটার তালিকায় ভয়াবহ জালিয়াতি ছিল, যা একটি স্থিতিশীল গণতন্ত্রিক ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত। যদিও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জনগণের ভূমিকাই সবচেয়ে বড়।

ভোটার তালিকার জালিয়াতির বিষয়টি নিষ্পত্তি করার অস্বীকৃতি, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়া এবং ২০০৮ সালের সংবিধানের ৪১৭ অনুচ্ছেদের (এমন কোন কাজ না করা যা বলপূর্বকভাবে ক্ষমতা গ্রহণের মাধ্যমে ইউনিয়নের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে এবং জাতীয় সংহতি ব্যহত করে) সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় নিম্ন-কক্ষ ও উচ্চ-কক্ষের সংসদ অধিবেশন স্থগিত করার অনুরোধ করা সত্ত্বেও অনুসরণ না করা।

এ সকল কর্মকাণ্ডের কারণে ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানাতে মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ হয়। অন্যান্য দল ও সাধারণ মানুষও পতাকাসহ বিভিন্ন ধরনের উস্কানিমূলক প্রতিবাদ করে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

যতক্ষণ না এই সমস্যার সমাধান হয়, ততক্ষণ এটি গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা হিসেব কাজ করবে। সুতরাং আইন অনুযায়ী এর সমাধান করতে হবে। সুতরাং, ২০০৮ সালের সংবিধানের ৪১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।

ভোটার তালিকার যাচাই-বাছাই এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য, ২০০৮ সালের সংবিধানের ৪১৮ অনুচ্ছেদের উপ অনুচ্ছেদ (ক) অনুসারে দেশের আইন প্রণয়ন ও প্রশাসনিক কর্তৃত্ব সেনা প্রধানের হাতে হস্তান্তর করা হলো। এই জরুরি অবস্থা দেশব্যাপী কার্যকর হবে এবং মেয়াদ হবে এক বছর।”