সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি ও ক্ষমতাসীন দলের জেষ্ঠ্য নেতাদের আটক করে জরুরি অবস্থা জারির মধ্য দিয়ে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। আর এ ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকার এবং সামরিক বাহিনীর মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা চলছিলো। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে রাজধানী নাইপিদোতে অভিযান চালিয়ে দেশটির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চি এবং দলটির জেষ্ঠ্য নেতাদের আটক করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এরপরই জরুরি অবস্থা জারি করে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী।
এ ঘটনায় দেশটির রাখাইন রাজ্য (আরাকান) থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টসহ এর আগে বিভিন্ন সময়ে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে এসেছিলো এ সকল রোহিঙ্গা নাগরিক। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে এখন বসবাস করছে প্রায় ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক।
এ ঘটনায় কক্সবাজারে বসবাসকারি রোহিঙ্গাদের মধ্যে কেউ কেউ খুশি হয়েছেন বলে অভিমত জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এর আগে ক্ষমতায় এসে অং সান সু চি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা না করে নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন করেছেন। বেঈমানের পতন হওয়ায় এ ঘটনায় তারা খুশি হয়েছেন।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে কেউ কেউ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দাবি জানিয়ে বলছেন, সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী দেশটিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ফলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন অনিশ্চিতের মুখে পড়েছে। এখন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি আরো বিলম্বিত হবে। তবে তাদের সবারই দাবি, নাগরিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে রোহিঙ্গাদের দেশটিতে প্রত্যাবাসনের।
অন্যদিকে বিজিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে উখিয়া ও টেকনাফসহ পুরো মিয়ানমার সীমান্তজুড়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কড়া নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। বিজিবি সীমান্ত পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে।