৪৮ থেকে ৫২। ভাষার দাবিতে মিছিল-সমাবেশের চেনা-অচেনা মুহূর্ত। ৬৯ বছর আগের ক্ষণগুলো যেন জীবন্ত হয়ে আছে এখনও। ভাষা আন্দোলনের মুহূর্তগুলো স্থিরচিত্রে সজীব হয়ে আছে দেশের প্রথম ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জাদুঘরে।
ভাষা সৈনিক কাজী গোলাম মাহবুবের শেষ ইচ্ছাতেই জাদুঘরটি গড়ে তুলেছে তাঁর পরিবার।
ভাষাসৈনিকদের ব্যবহৃত কলম, টেপ-রেকর্ডারে এখনও কালের স্মৃতি বয়ে চলছে। ভাষা আন্দোলন গবেষণাকেন্দ্র ও জাদুঘরের সাদাকালো পটভূমিতে ফুটে আছে ৫২’র সংগ্রামের ইতাহাস।
তমুদ্দিন মজলিস ভাষা আন্দোলনের প্রথম সংগঠন। এখান থেকেই হয়েছিল আন্দোলনের সূচনা। আছে প্রথম শহীদ মিনার, যা তৈরির দু’দিন পর, ৫২’র ২৬ ফেব্রুয়ারি, ভেঙে ফেলে ওই সময়ের শাসকগোষ্ঠী। আরো আছে, ভাষা আন্দোলনের ঘোষণাপত্র। রেসকোর্স ময়দানে জিন্নাহর উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার বিতর্কিত ঘোষণার ছবি, যা আপনাকে নিয়ে যাবে সেই উন্মাতাল সময়ে।
দর্শনার্থীরা বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের বিষয়গুলো পাঠ্য পুস্তকে খুব সংক্ষিপ্ত করে দেয়া হয়েছে। সে কারণে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায় না। তাই এখানে এসে অনেক কিছুই দেখতে ও বুঝতে পারছেন তারা।
ভাষা আন্দোলন গবেষণা কেন্দ্র ও জাদুঘরের চেয়ারম্যান পেয়ারী মাহবুব বলেন, “অনেক চেষ্টা করেও যখন কোথাও কোন জায়গা পাইনি তখন বাসার মধ্যেই দুইটা রুম নিয়ে এটা শুরু করেছি।”
ভাষা আন্দোলনের বিশাল ইতিহাস, ঐতিহ্য আর পরিক্রমাকে তুলে ধরা হয়েছে মাত্র দুই কক্ষের ক্যানভাসে। তবে সরকারি জায়গা বরাদ্দ পেলে কলেবর আরো বাড়তো উল্লেখ করে ভাষা আন্দোলন গবেষণা কেন্দ্র ও জাদুঘরের পরিচালক লিপি মাহবুব বলেন, “সরকারিভাবে জায়গা বরাদ্ধ না পাওয়ায় ট্রাস্টির মাধ্যমে নিজ বাসায় দুই রুম নিয়েই ২০০৬ সাল থেকে এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার করা হচ্ছে।”
প্রবেশমূল্য ছাড়াই যাওয়া যাবে দেশের প্রথম বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জাদুঘরটিতে। সময়: শুক্রবার বাদে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা। ঠিকানা: ধানমন্ডির ১০ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ি।