মিয়ানমারের ক্যু’তে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক

জান্তা শাসনে অনিশ্চয়তায় মিয়ানমারের রপ্তানি ও বিদেশি বিনিয়োগ। একটু কৌশলী হলেই লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ।

একটু কৌশলী হলেই, মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায়, দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক সুফল পেতে পারে বাংলাদেশ। কেননা, জান্তা সরকারের কারণে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবরোধ জারির শঙ্কা জোরদার হচ্ছে মিয়ানমারে। এমন অবস্থায়, বিনিয়োগ আর পণ্য আমদানিতে বিকল্প দেশ খুঁজবেন বিশ্ব উদ্যোক্তারা। বিশ্লেষকদের মতে, সেই সুযোগটাই নিতে হবে বাংলাদেশকে।

৫০ বছরের মতো সেনাশাসনে থাকা মিয়ানমারের রাস্তায় আবারও জলপাই ট্যাঙ্ক। রাষ্ট্রক্ষমতায় আবারও সামরিক জান্তা। 

অথচ, গত এক দশকে অর্থনীতিতে গতি এসেছিলো। বিশ্ব-উদ্যোক্তারাও আগ্রহী হচ্ছিলো মিয়ানমারের প্রতি। গত বছরেও বাংলাদেশের তুলনায় চারগুণ বেশি বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছে মিয়ানমার। রপ্তানির গতিও ছিলো উর্ধ্বমুখী।

অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, যেহেতু মিয়ানমারের গণতন্ত্র প্রক্রিয়াটি উল্টোদিকে মোড় নিয়েছে, সেহেতু এর প্রভাবে দেশটির বাণিজ্যেও পড়বে যদি সামরিক জান্তা সরকারের অবসান না হয়। এর ফলে চীন ছাড়া প্রায় সব দেশই তাদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তু প্রত্যাহার করবে। এই সুযোগে বাংলাদেশ যদি ওইসব দেশকে ভালো কোন পরিকল্পনা দেয় তাহলে তারা আমাদের এখানে বিনিয়োগে আগ্রহী হতে পারে।

বিশ্ববাজারে মূলত কমদামি পোশাক রপ্তানি করে মিয়ানমার। ২০১৩ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা বা জিএসপি পাচ্ছে দেশটি। যাতে ভর করে, ২০২৩ সালের মধ্যে পোশাক রপ্তানি ১ হাজার কোটি ডলারে নিতে চেয়েছিলো নেপিদো। কিন্তু রাখাইন গণহত্যায় জিএসপি পুনবির্বেচনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তার মধ্যেই সামরিক ক্যু। তাই রপ্তানি আদেশ বাতিলের শঙ্কা আরো বেড়েছে। 

বিকেএমইএ সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয় ইউনিয়নের যেসকল ক্রেতা প্রতিষ্ঠান আছে, তারা এই অবস্থায় মিয়ানমারকে সোর্সিং দেশ হিসেবে রাখতে চাইবে না। তাদের হারিয়ে যাওয়া অর্ডারের একটা অংশ আমরা পেতে পারি। কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ না শুধু লাভবান হবে। ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়া তারা কিন্তু বাংলাদেশ থেকে বেশি লাভবান হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে।

বাংলাদেশ মিয়ানমার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নুরুল হক বলেন, কিছু চাইনিজ আছে, তাদের ফ্যাক্টরিগুলি ব্যাক করলে তাদের খরচ এফেক্টিভ হবে না। সেগুলো আমাদের এখানে আসতে পারে। আমরা ইতোমধ্যে বায়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করেছি। সারা পৃথিবীতে মিয়ানমারের মাছের একটা ভালো রপ্তানির অংশ যায়। যদি আমাদের সরকার নীতি সহায়তা দেয়, আমরা ওইখান থেকে আমদানি করে ৩০ শতাংশ ভ্যালু অ্যাড করেও ব্যবসা করতে পারি।

এদিকে ক্যু’র পরের দুই দিন টেকনাফে মিয়ানমার থেকে কোন ট্রলার আসেনি। তবে তারপর থেকে সীমান্ত বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।