ভাষা আন্দোলনে প্রথম রক্ত ঝরেছিলো রাজশাহীতে

বাংলাদেশ সকল জেলা

“মাতৃভাষা বাংলা চাই” স্লোগানে ১৯৪৮ সাল থেকেই আন্দোলনে মুখর ছিলো রাজশাহী। শুধু তাই নয়, মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে প্রথম রক্ত ঝরেছিলো রাজশাহীতেই। আবার এখানেই হয়েছে প্রথম শহিদ মিনার বা স্মৃতিস্তম্ভ।

মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য রক্ত দেয়ার ইতিহাস বিশ্বে বিরল। এ আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার ছিলো রাজশাহী। ভাষা সৈনিকদের মতে, ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চ মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে রাজশাহীতেও ধর্মঘট ও বিক্ষোভ হয়। ফায়ার সার্ভিস মোড়ে বিক্ষোভ মিছিলটি পৌঁছালে পুলিশ ও মুসলিম লীগের কর্মীরা হামলা চালায়। এতে অনেক ভাষা সৈনিক আহত হন, রক্তাক্ত অবস্থায় বন্দি করা হয় অনেককে।

ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিনই মিছিল করতাম। পুলিশের সঙ্গে গোলমাল হতো। কলেজিয়েট স্কুলের এক ছাত্রকে ফায়ার সার্ভিসের ওখানে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। ওর মাথা ফেটে যায়, রক্ত পড়ে। অনেকেই বলে প্রথম রক্ত ঝরেছিলো রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে।’

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ভাষা সৈনিকদের মিছিলে গুলির খবরটি রাজশাহীতে বিদ্যুৎবেগে ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থীরা গঠন করে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ। ঢাকায় নিহতদের প্রতি সম্মান জানাতে রাজশাহী কলেজে ইট ও কাঁদা দিয়ে ওই রাতেই নির্মাণ করা হয় দেশের প্রথম শহীদ মিনার।

ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন জানান, ‘একমাত্র পথ ছিলো ট্রেনে যে খবরের কাগজ ছিলো সেটা পাওয়া। কিছু মাড়োয়ারি এখানে ব্যবসা করতো যারা ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো। তাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, ঢাকায় গুলি চলেছে। কে মারা গেছে তার কিছুই জানতে পারিনি আমরা। তখনই ঠিক করা হয় একটা স্মৃতিস্তম্ভ করা হবে। রাজশাহী কলেজে সেটা থেকেই ভাষা আন্দোলন আরম্ভ হয়ে গেলো।’

রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজশাহী মেডিক্যালের শিক্ষার্থী এসএমএ গাফফার, রাজশাহী কলেজের গোলাম আরিফ টিপু, হাবিবুর রহমানসহ অনেকেই।