সামরিক অভ্যুত্থানে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী জান্তা সরকার দেশটির ২৩ হাজার ৩’শ ১৪ জন কারাবন্দির সাধারণ ক্ষমা ষোষণা করেছে।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সামরিক বাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ সম্পর্কিত একটি বিবৃতি দিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বন্দিদের ভালো নাগরিক হিসেবে পরিণত করা এবং দেশের সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মানবিক এবং সহানুভূতির ভিত্তি তৈরি করে শান্তি, উন্নয়ন ও শৃঙ্খলা নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্যই এই পদক্ষেপ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের ২৩ হাজারের বেশি কারাবন্দির পাশাপাশি ৫৫ বিদেশি বন্দির সাজাও মওকুফ করা হয়েছে।
কারাবন্দিদের মুক্তি নিয়ে এর বাইরে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রতিজ্ঞায় টানা ষষ্ঠদিনের মতো বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে।
কয়েকদিন ধরেই দেশটির রাজধানী নাইপিদো’র রাস্তায় শত শত প্রতিবাদকারী সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে। অভ্যুত্থানের পর থেকে আটক সু চি’র সমর্থনে লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেছে গণতন্ত্রকামী সমর্থকরা। অভ্যুত্থান রক্তপাতহীন হলেও বিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগ শুরু করেছে জান্তা সরকার।
এদিকে, মঙ্গলবার নাইপিদোতে সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলনে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। আহত হয়েছেন অন্তত ৪ বিক্ষোভকারী। এরমধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর। বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করতে প্রথমে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। এতে কাজ না হলে রাবার বুলেট ছোঁড়ে। যদিও আঘাতের ধরন দেখে চিকিৎসকরা সন্দেহ করছেন তা সত্যিকারের বুলেট ছিল।
মান্দালায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ছোঁড়া হয় এবং জলকামান ব্যবহার করা হয়। সংঘর্ষে ৪ পুলিশ আহত হয়েছে বলে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়। মঙ্গলবার মান্দালায়ে কারফিউ উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করে ২০ হাজার মানুষ।
অন্যদিকে, বিক্ষোভ দমনে জলকামান, টিয়ারশেল এবং রাবার বুলেট ছোড়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।