গত রবিবার টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে করোনার ভ্যাকসিন ছাড়াই একাধিক মানুষের দেহে ইঞ্জেকশন পুশ করার অভিযোগ উঠে উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে।
বিষয়টি জানাজানি হলে তদন্ত কমিটি গঠন করে সত্যতা পায় কর্তৃপক্ষ। পরে ভ্যাকসিন প্রবেশ না করিয়ে সিরিঞ্জ ফেলে দেওয়ার ঘটনায় সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে তাকে বহিস্কার করা হয়। এর আগে সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান।
তবে ওই দিন ভ্যাকসিন না পাওয়াদের এখনো শনাক্ত করতে পারেনি তারা। ভ্যাকসিন না পাওয়াদের শনাক্ত করা কঠিন ও জটিল প্রক্রিয়া বলে অভিমত সিভিল সার্জনের।
আর এতে ওই দিন করোনার টিকা গ্রহণকারীরা পড়েছেন শঙ্কায়। তাদের একজন ৭০ বছর বয়সী টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের পাথরাইল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এতো দ্রুত টিকা দিয়েছে যে তাতে ভ্যাকসিন ভর্তি ছিলো কি না তা বুঝতে পারিনি। টিকা গ্রহণের পর প্রথম ডোজের মতো শারীরিক অবস্থার কোন পরিবর্তনও হয়নি। এজন্য তিনি শঙ্কায় আছেন তিনি।
শুধু তিনি নন। দেলদুয়ার হাসপাতাল সূত্র মতে ১লা আগষ্ট রবিবার মোট প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মোট ৪৫৪ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। ওই দিন টিকা গ্রহণকারী ৪৫৪ জনই পড়েছেন বিপাকে। স্বাস্থ্য বিভাগের এমন অবহেলার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে ওই দিনের টিকা করোনার টিকা গ্রহণকারীর স্বজনরা দ্রুত এর প্রতিকার চেয়েছেন।
এ বিষয়ে দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবরা পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. প্রবীর কুমার বলেন, করোনার ভ্যাকসিন ছাড়াই সুই পুশ করার পর ফেলা দেয়া ২০টি সিরিঞ্জ জব্দ করা হয়।
এছাড়া ওই ২০জন ব্যক্তিকে শনাক্ত করার জন্য পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। টিকা দেয়ার তারিখের দিনের সকল কাগজ পত্র যাচাই-বাছাই করে ভ্যাকসিন না পাওয়া ব্যক্তিদের পুনরায় ভ্যাকসিনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
জেলা সিভিল সার্জন আবুল ফজল মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর পর মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ওই দিন যারা টিকাগ্রহণ করেছেন (ভ্যাকসিন ছাড়াই) তাদের খুঁজে বের করা খুবই জটিল একটি প্রক্রিয়া। যারা নিয়েছেন তাদের লাভ বা ক্ষতি হয়নি। তারা জানেন না যে টিকা নিয়েছেন কিনা। এরপরেও তাদের খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছি।
আগেও ভ্যাকসিন ছাড়াই ইনজেকশন পুশের মতো ঘটনা ঘটেছি কি না তারও তদন্ত চান এলাকাবাসী।