বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন ও সরকার বদলের হাওয়া এবার পশ্চিমবঙ্গে। ঢাকার মতো একই স্লোগান শোনা যাচ্ছে কলকাতাতেও। রাজ্যটির পথে পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে ‘দাবি ১, দফা ১’ স্লোগান দিচ্ছেন প্রতিবাদী ছাত্র-ছাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ।
এ নিয়ে ছাত্র আন্দোলন গড়াল ১২তম দিনে। কলকাতার পাশাপাশি গত পাঁচ দিন ধরে ছাত্র আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে ভারতের অন্য অঙ্গরাজ্য গুলিতেও।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের রায় আরও বিপদে ফেলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে। যা অনুপ্রাণিত করেছে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবাদী মানুষ এবং আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের। ছাত্র সমাজের মুখে মুখে এখন মুখরিত ‘দাবি এক, দফা এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ’।
আজ সকালে কলকাতার অদূরে সল্টলেক ও বিধান নগরের রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কর্মী-সমর্থকরা। প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই আরজি কর কাণ্ডে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনিত গোয়েল এবং আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভের শামিল হন কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক। সেখানে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র সমাজের ধস্তাধস্তি হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। গ্রেপ্তার করতে বারণ করেন বেশ কিছু এবিপি নেতা-কর্মী।
আজ দুপুরে আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদের সামনে জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ অভিযান করার জন্য কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হতে থাকেন। পরে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ সদর দপ্তর লালবাজারের নিয়ে যায়।
মঙ্গলবার পথে নেমেছেন আরেক দল সিপিআইএম। বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে জেলাশাসকের দপ্তরগুলিতে বিক্ষোভ নেতাকর্মীরা।
ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর ভাই নওশাদ সিদ্দিকীর দল ইন্ডিয়ান সিকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) একই দাবিতে পশ্চিমবঙ্গে সর্বত্র প্রতিবাদ মিছিল করেন। অন্যদিকে বিতর্কের মাঝেও আগামীকাল দুপুরে ময়দানের ফুটবলার গোষ্ঠ পালের মূর্তি থেকে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও তার স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ আগামী ২৬শে আগস্টের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এরমধ্যে পদত্যাগ না করলে পরের দিন অর্থাৎ ২৭শে আগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র সমাজ। এই নবান্ন কর্মসূচিতে রাজ্যের সমস্ত দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষকে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।